আধাঁরে আলোয়ে,,,,,,,,
বাড়িটার নাম জড়মহল।কোনো এক কালে এই বাড়িতে বিশাল এক দীঘি ছিলো।কেউ কউ বলে বাড়িটা দীঘীর ওপর ভেসে থাকত।এই বাড়িটা বানিয়েছেন আমার দাদার বাবা।তিনি ছিলেন সকল শোর্যবীর্যের অধিকারী।
আমার মনটা আজ খুব খারাপ।আজ স্কুলে গিয়েছিলাম,প্রথম পিিরয়ডেই গণিত স্যার রোল কল করতে গিয়ে আমাকে দাড় করালো।
বললঃনাম কি?
আমি বললামঃমাজারুল ইসলাম,স্যার।
স্যার তারপর বললঃঠোট কালো কেনো তোর,সিগারেট খাস??
আমার অজান্তেই আমার ডান হাতের আঙ্গুল দিয়ে আমার ঠোটটা ছুলাম।সাথে সাথে ক্লাসের সব মেয়েরা হিহি করে হাঁসতে লাগলো।হাসি সংক্রামন রোগ তাই মেয়েদের সাথে সাথে এবার ছেলেরাও হাসতে লাগলো।আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললাম।স্যার হুংকার দিয়ে উঠল।বললঃচুপ একদম চুপ।কেউ হাসবি না। খুন করে ফেলব একদম।
ক্লাসের সবাই স্যারকে অনেক ভয় পায় তাই চুপ হয়ে গেল।তারপর স্যার আমাকে বললঃকি,সিগারেট খাস?
আমি মাথা নিচু করে বললামঃনা স্যার আমি খাই না।
স্যার গম্ভীর মুখে বললঃহুম খাবি না কখনো,ঠিক আছে?
আমি বললামঃজ্বী স্যার ঠিক আছে।
স্যার বললঃগুড,বোস।
আমি বসে পড়লাম।দেখি ক্লাসের সবাই ফিসফিস করে কথা বলছে।ক্লাসে কি পড়া হলো কি পড়া দিলো কিছুই বুঝলাম না।ছুিটর সময় অনতু এসে আমাকে বললঃকোটন তুই কি সত্যিই সিগারেট খাস??
আমি কিছু না বলে চলে এলাম।
বাসায় এসে শুয়ে শুয়ে আকাশ পাতাল ভাবছি এমন সময় মা ঝড়ের মত ঢুকলেন।মা আমাকে সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করেন।আমার সাথে কথাই বলেন না কিন্তু টোকন ভাইয়াকে সবচেয়ে বেশী পছন্দ করেন।মা আমাকে বললঃকোটন তুই নাকি সিগারেট খাস?
আমি অবাক হয়ে বললামঃ না আমি খাই না।
তাহলে তোর স্যার যে বলল গতকাল সন্ধ্যায় তোকে সিগারেট খেতে দেখেছে।মা বলল
আমি বললামঃভুল দেখেছে।
মা কিছু না বলে দড়জাটা বন্ধ করে দিলো।
খোকন খেলতে গিয়েছিলো মাঠে।আজকে ও খুব খুশি।আজকে ও দুটো গোল করেছে আর ওর দল জিতেছেও দু-শূন্য গোলে।ও যখন বাড়ি ফিরল তখন এক ভয়াবহ দৃশ্য দেখলো।
দেখলো মতির মা চিৎকার করছে আর কণা পাগলের মত দড়জায় ধাক্কাচ্ছে,আচড়াচ্ছে।রুমের ভেতর থেকে অমানুষিক চিৎকার ভেসে আসছে।
আমি ব্যাথায় কিছুক্ষণের জন্য চোখ খুলতে পারলাম না।এত মার আমি আগেও খেয়েছি তাই সহ্য হয়ে গেছে।চোখের নিচে কালসীতে পড়ে গেছে,হাত দুটো খুব ফুলে গেছে।বুঝতে পারলাম গায়ে অনেক জ্বর উঠেছে।স্কুলে যাবার আগে মার ঘরে উকি দিলাম দেখলাম মা শুয়ে আছে।মনে হলো অসুস্থ। মা আমাকে দেখে ফেলল বলল:কে কোটন??
আমি সরে আসলাম।গত দুদিন ধরে আমি স্কুলে যাই না।ঐদিন বাবা মার সাথে খুব জগড়া করেছে আমাকে মেড়েছে বলে।
আগে মা অনেক ভালো ছিলো।আমাদের চারজনকে বিকেল হলেই বাগানে বাধানো গাছটার কাছে নিয়ে যেত
মা এই জাগাটা মালি দিয়ে পরিষ্কার করে রাখত আমরা বসব বলে।আর বাকি জায়গাটুকু জংলা করে রাখত।আসলে মা এই জঙ্গল মত জায়গাটাকে আপন করে নিয়েছেন।আমরা বিকেল বেলা ঐ গাছের বেদীতে বসতাম।মা গান গাইত আমরা শুনতাম।গোধূলির সেই সময়টা আমার কাছে কেমন স্বপ্নময় লাগত।কমলার রঙে রেঙ্গে সূর্যটা বাড়ি যেত।দেখতাম মা কাঁদছে। কি জন্য কাঁদছে জানতাম না।তখন মাকে অনেক সুন্দর লাগত তখন।হয়তোবা পুড়নো কোনো স্মৃতি মনে পড়ে যেত হয়তবা,,,,,,,,,,,,,,,,,,জানি না আমি,জানতে চায়ও না।
(অংশ বিশেষ)
(ধুসর আধাঁর কালো)